জয়পুরহাট সদর উপজেলার দোগাছি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সামছুল আলম ওরফে সুমনের বিরুদ্ধে এক ভ্যানচালককে চড়থাপ্পড় মারার অভিযোগ উঠেছে। ওই ভ্যানচালকের ভাতিজা মারার ভিডিও ধারণ করতে গেলে তাঁর মুঠোফোন কেড়ে নিয়ে তাঁকে ‘জুতাপেটা’ করা হয়।
সোমবার (১৮ জুলাই) দুপুরে দোগাছি ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, গ্রাম পুলিশ দিয়ে ওই ভ্যানচালককে বাড়ি থেকে ধরে এনে কার্যালয়ের একটি কক্ষে তিন ঘণ্টা আটকে রাখা হয়।
ভুক্তভোগী ভ্যানচালকের নাম লেবু হোসেন (৪৫)। তাঁর বাড়ি দোগাছি ইউনিয়নের চক ভারুনিয়া গ্রামে। তবে লেবু হোসেনকে আটকে রাখার কথা স্বীকার করলেও মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন চেয়ারম্যান সামছুল আলম।
লেবু মিয়া বলেন, ‘প্রতিবেশী শাহ আলম ও মোমিনের সঙ্গে আমার সম্পত্তি নিয়ে দ্বন্দ্ব চলছিল। কয়েক দিন আগে চেয়ারম্যান সামছুল আলম সালিস করে উভয় পক্ষকে ওই জায়গায় স্থাপনা করতে নিষেধ করেন। এরপর শাহ আলম বিরোধপূর্ণ জায়গা বাঁশ দিয়ে ঘেরাও করে রাখেন। আজ সকালে আমার স্ত্রীসহ অন্যরা ওই জায়গায় গিয়ে পুঁতে রাখা বাঁশ সরিয়ে ফেলতে বলেন। এটা নিয়ে নারীদের মধ্যে ঝগড়া হয়।
ওই সময় আমি ভ্যান নিয়ে জয়পুরহাট শহরে ছিলাম। বাড়িতে ফেরার পর গ্রাম পুলিশ এসে আমাকে চেয়ারম্যানের কথা বলে ইউপি কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে যায়। এরপর মুঠোফোনে চেয়ারম্যানের নির্দেশনা পেয়ে গ্রাম পুলিশ আমাকে ইউপি কার্যালয়ের একটি কক্ষে তালা মেরে আটকে রাখে। খবর পেয়ে আমার স্বজনেরা ইউপি কার্যালয়ে চলে আসেন।’
লেবু হোসেন আরও বলেন, ‘বেলা ১টার পর তালা খুলে তাঁকে ইউপি চেয়ারম্যান সামছুল আলমের কক্ষে নিয়ে যাওয়া হয়।এ সময় সামছুল আলম তাঁর কক্ষে থাকা লোকজনের সামনে আমাকে চড়থাপ্পড় মারেন। তখন আমার ভাতিজা আবু মুসা এ দৃশ্য মুঠোফোনে ভিডিও করছিলেন। এ সময় চেয়ারম্যান উঠে এসে মুঠোফোন কেড়ে নিয়ে ধারণ করা ভিডিও মুছে ফেলেন এবং আবু মুসাকে জুতাপেটা করেন। এরপর আমাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।’
অভিযোগের বিষয়ে চেয়ারম্যান সামছুল আলম বলেন, ‘লেবু হোসেন আমাকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেছে। এ কারণে গ্রাম পুলিশ পাঠিয়ে তাকে ইউপি কার্যালয়ে আনা হয়েছিল। আমি কার্যালয়ের বাইরে থাকায় লেবুকে একটি কক্ষে আটকে রাখা হয়েছিল। আমি আসার পর তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।’
লেবু হোসেনকে একটু শাসন করেছেন মন্তব্য করে সামছুল আলম বলেন, ‘লেবুর ভাতিজা এসে ভিডিও ধারণ করছিল। এ কারণে লোকজন তাকে সামান্য মারধর করেছে। আমি কাউকে মারধর করিনি। উল্টো লেবুর স্ত্রী আমাকে মারতে উদ্যত হয়েছিলেন।’
এ ঘটনায় থানায় কেউ লিখিত অভিযোগ দেননি জানিয়ে জয়পুরহাট সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) গোলাম সারোয়ার বলেন, ভ্যানচালককে বাড়ি থেকে ডেকে এনে দোগাছি ইউপি কার্যালয়ের একটি কক্ষে তালা দিয়ে আটকে রাখা হয়েছিল। জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯–এ কল করে বিষয়টি জানানো হয়। পুলিশ যাওয়ার আগেই তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।